Wellcome to National Portal
সমাজসেবা অধিদফতর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২১st August ২০২৩

রোহিঙ্গা শিশু সুরক্ষা কার্যক্রম

সমাজসেবা অধিদফতর জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ ও শিশু আইন, ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৮) এর আলোকে শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমার নাগরিক ২০১৭ সালে জীবন রক্ষার্থে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় গ্রহণ করে। এ প্রেক্ষিতে নির্যাতন, নিপীড়ন ও বৈষম্যের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভার ১৭নং দফার নির্দেশানায় সমাজেসেবা অধিদফতর রোহিঙ্গা শিশু সুরক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ করে।

অতঃপর সমাজেসেবা অধিদফতর রোহিঙ্গা এতিম ও ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের জরিপ কার্য সম্পন্ন করে এবং ফলাফল হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরীর ৩৯,৮৪১ জন শিশুকে রেজিস্ট্রভূক্ত করা হয়।

২২ জানুয়ারী ২০১৮ সালে সমাজসেবা অধিদফতরের ও ইউনিসেফ এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় এবং এরই ধারাবাহিকতায় ইউনিসেফ এর কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় এ কার্যক্রমটি সফলভাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও হোস্ট কমিউনিটিতে (টেকনাফ ও উখিয়া) বাস্তবায়িত হয়ে আসছে। 

 

জরিপে প্রাপ্ত শিশুর তথ্য

শিশুর ধরন

লিঙ্গভিত্তিক বিন্যাস

%

ছেলে

মেয়ে

মোট

পিতৃ-মাতৃহীন

৩,৭৪২

৪,৬৪৯

৮,৩৯১

২১

পিতৃহীন

১৪,২৬০

১৫,০৫৫

২৯,৩১৫

৭৪

পিতা-মাতা হতে বিচ্ছিন্ন (পরিচিত কারো সাথে আছে)

৪৩৪

৪৩১

৮৬৫

পিতা-মাতা হতে বিচ্ছিন্ন (অপরিচিত কারো সাথে আছে)

১৬

২১

৩৭

পিতা-মাতা হতে বিচ্ছিন্ন শিশু ( একা আছে) 

৩৯

২৯

৬৮

০.২

অন্যান্য

৫৬৮

৫৯৭

১,১৬৫

 

মোট

১৯,০৫৯

২০,৭৮২

৩৯,৮৪১

100

 

 

রুপকল্প (Vision) : শিশুর সর্বোত্তম স্বার্থ সুরক্ষা।

                        

উদ্দেশ্য : মায়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত আগত জনগোষ্ঠীর সুবিধাবঞ্চিত শিশু এবং হোস্ট কমিউনিটির সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চত করা ।

 

কার্যক্রম ও অর্জন :  রোহিঙ্গা শিশু সুরক্ষা কার্যক্রম শিশু সুরক্ষায় নিম্নোক্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে-

  1. শিশুর কেইস ম্যানেজমেন্ট
  2. সমাজভিত্তিক শিশু সুরক্ষা কমিটি কার্যক্রম (সিবিসিপিসি)
  3. প্যারেন্টিং অ্যাওয়ারনেস
  4. কমিউনিটি অ্যাওয়ারনেস
  5. রেফারেল সার্ভিস
  6. হারিয়ে যাওয়া/পাচারের শিকার শিশুকে পরিবারে/ফস্টার কেয়ারগিভারের কাছে হস্তান্তর/পুনর্বাসন।

 

চাইল্ড প্রোটেকশন কেইস ম্যানেজমেন্ট :  চাইল্ড প্রোটেকশন কেইস ম্যানেজমেন্ট সূচনালগ্ন থেকে চাইল্ড প্রোটেকশন কেইস ম্যানেজমেন্টের (সিপিসিএম) মাধ্যমে নগদ সহায়তা প্রদান করে আসছে। ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত ৯,৪১৪ জন শিশুদের মাঝে ১৮ কোটি ৭৭ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। সোশ্যাল ওয়ার্কার ও কেইজ সুপারভাইজারগণ সিপিসিএমের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিউনিটির শিশুদের সর্বোত্তম সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ও ঝুঁকিতে থাকা শিশুর মাঝে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা শিশু সুরক্ষা কার্যক্রম এখন পর্যন্ত ৪১,৬৫৭ জন শিশুকে সনাক্তকরণ/তথ্য সংগ্রহ এবং ঝুঁকি মূল্যায়ন করেছে এবং তার মধ্যে কেইস ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস প্রদান করেছে ৭,৪০৬ জন শিশুকে।

 

কমিউনিটি বেজড চাইল্ড প্রোটেকশন কমিটি (সিবিসিপিসি) : রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিউনিটির শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ ও উন্নয়নে কমিউনিটি বেজড চাইল্ড প্রোটেকশন কমিটি (সিবিসিপিসি) কার্যক্রম রয়েছে। ঝুঁকিতে থাকা শিশুর তথ্য সংগ্রহ ও সহায়তার জন্য এই কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া হারিয়ে যাওয়া শিশুর পরিবারের সাথে রিইউনিফিকেশন কাজের ক্ষেত্রে শিশুদের জন্য প্রতিরক্ষামূলক পরিবেশ নিশ্চিতকরণে এই কমিটি সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। ক্যাম্প ও হোস্ট কমিউনিটিতে ৮৩টি শিশু সুরক্ষা কমিটি (ক্যাম্পে ৫৬ টি ও হোস্ট কমিউনিটিতে ২৭ টি) রয়েছে।

 

প্যারেন্টিং অ্যাওয়ারনেস সেশন : আরসিপিপি আয়োজিত প্যারেন্টিং অ্যাওয়ারনেস সেশনের ফলে শিশুর মা-বাবা ও কেয়ারগিভারগণ ইতিবাচক প্যারেন্টিং এবং শিশু সুরক্ষা ও যত্ন সম্বন্ধে সচেতন হয়। প্রশিক্ষিত সমাজকর্মী দ্বারা এই সেশনগুলো প্রদান করা হয়। শিশু লালন-পালন, অবহেলিত শিশুর প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি এবং শিশুর অধিকার নিশ্চিতে প্যারেন্টিং অ্যাওয়ারনেস সেশন প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে। এখন পর্যন্ত প্যারেন্টিং অ্যাওয়ারনেস সেশনস-১৬৩ টি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

কমিউনিটি অ্যাওয়ারনেস সেশন : আরসিপিপি’র প্রশিক্ষিত সমাজকর্মীগণ কমিউনিটি অ্যাওয়ারনেস সেশনের মাধ্যমে সমাজের সকল মানুষকে শিশু সুরক্ষা ও উন্নয়নে সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ কার্য পরিচালনা করেন।। যেহেতু সমাজ উন্নয়ন ও শিশুর বিকাশে প্রতিটি অংশীজনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদান রয়েছে, তাই এই সেশনগুলো কমিউনিটির সকল মানুষকে শিশু সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও শিশুর নিরাপদ বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। এছাড়া ফ্যামিলি ট্রেসিং ও রিইউনিফিকেশনেও এই সেশনগুলো সহায়তা করে। এখন পযর্ন্ত  অ্যাওয়ারনেস সেশনস- ১০,৭৪৭ টি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

রেফারেল সার্ভিস ও ফ্যামিলি ট্রেসিং এন্ড ‍রিইউনিফেকেশন : ৮,৮৫২ জন শিশুকে রেফারেল সার্ভিস প্রদান ও ২৭৬৫ জন শিশুকে ফ্যামিলি ট্রেসিং এন্ড ‍রিইউনিফেকেশন করা হয়েছে। রোহিঙ্গা কমিউনিটির সর্বমোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশই হল শিশু, যেখানে সকল শিশুই কোন না কোন ঝুঁকিতে রয়েছে। এখন পযর্ন্ত রোহিঙ্গা শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় ২,৯১৫ জন ঝুঁকিপূর্ণ শিশুর কেইস ম্যানেজমেন্ট চলমান রয়েছে। 

 

প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল : রোহিঙ্গা শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমে ৭৩ সমাজকর্মী, ৬ জন কেইস সুপার ভাইজার ও অফিসে ১৩ জন কর্মীসহ সর্বমোট ৯২ জন শিশু সুরক্ষা  কার্যক্রমে নিয়োজিত আছে।

 

ঝুঁকিপূর্ণ শিশুর মধ্যে হতে কেইস ম্যানেজম্যান্টের মাধ্যমে নগদ সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম:

কেইস ম্যানেজম্যান্টের মাধ্যমে ১২,৩২১ জন উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন শিশু হতে ৯,৪১৪ জন শিশুকে মাসিক 2000 টাকা হারে ১৮,৭৭,২৪,০০০ টাকা (আঠারো কোটি সাতাত্তর লক্ষ চব্বিশ হাজার) টাকা নগদ অর্থ (৬,৮৭৫ জন ফস্টার কেয়ারগিভারের তত্ত্বাবধানে) বিতরণ করা হয়েছে। এ সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম জুন ২০১৮ হতে জুন ২০২২ পর্যন্ত চলমান ছিল।

নগদ সহায়তা প্রাপ্ত শিশুর সংখ্যা

ক্রম.

উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ শিশুর শ্রেণি বিন্যাস

মোট শিশু

ছেলে শিশূ

মেয়ে শিশু

সঙ্গীহীন শিশু

৬৮

১৭

৫১

পিতা-মাতা হতে বিচ্ছিন্ন

১৩২৩

৫৯৭

৭২৬

পিতৃ-মাতৃহীন

২৭৭

১১০

১৬৭

পিতা-মাতা হতে বিচ্ছিন্ন শিশু (একা আছে) 

৫৭২৫

২৫১৫

৩২১০

প্রতিবন্ধী শিশু

১৪৬৫

৮১০

৬৫৫

প্রতিবন্ধী পিতা-মাতা’র শিশু 

৪৮৩

২৩৩

২৫০

ক্রনিকডিজিস এ আক্রান্ত পিতা- মাতা’র শিশু

৭৩

২৭

৪৬

মোট

৯,৪১৪

৪,৩০৯

৫,১০৫

 

 

আর্থিক ব্যবস্থাপনা :

  • কেন্দ্রিয় হিসাব পরিচালনা : মহাপরিচালক ও ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা (উপপরিচালক, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, কক্সবাজার)
  • স্থানীয় হিসাব পরিচালনা : ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা (উপপরিচালক, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, কক্সবাজার) ও বিকল্প ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা (সহকারী পরিচালক, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, কক্সবাজার)।