Wellcome to National Portal
সমাজসেবা অধিদফতর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৮ August ২০২৩

জাতীয় বিশেষ শিক্ষা কেন্দ্র

এ দেশের দরিদ্র ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর এক বিরাট অংশ প্রতিবন্ধী। এদের শিক্ষা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরীর লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ১৯৫৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিল্পমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন দার্শনিক, সমাজ সেবক, লেখক জনাব হেলেন কেলার- কে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। সেই থেকে বাংলাদেশে সমাজসেবার পথচলা। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন সমাজসেবা অধিদফতর ১৯৮৭ সালে শারীরিক, মানসিক প্রতিবন্ধীদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র শহীদ আসাদ গেইট, ঢাকার কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও যুগোপযোগী করার উদ্দেশ্যে নরওয়ের ৩ (তিন) টি স্বেচছাসেবী সংগঠন যথাঃ

(১) নরওয়েজিয়ান এ্যাসোসিয়েশন অব দ্যা ব্লাইণ্ড এন্ড পার্শ্বিয়ালী সাইটেড,

(২) নরওয়েজিয়ান এ্যাসোসিয়েশন অব দ্যা ডেফ ও

(৩) নরওয়েজিয়ান এ্যাসোসিয়েশন ফর দ্যা মেন্টালী রিটার্ডেড

এর আর্থিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সম্মুখসহ দক্ষিণ পশ্চিম কোণের জায়গার পরিবর্তে ঢাকার মিরপুরসহ-১৪ নম্বর সেকশনে ৬.০০ (ছয়) একর জমির উপর ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সমাজসেবা অধিদফতরাধীন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত দক্ষিণ এশিয়ার মডেল ইনস্টিটিউট হিসেবে বিশেষ শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে।

 

এ প্রতিষ্ঠানে রয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত “ বিশেষ শিক্ষা শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ” এবং এ কলেজের ল্যাবরেটরী স্কুল হিসাবে ৩ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১) বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় (২) বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এবং (৩) দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এবং ১টি মাধ্যমিক (বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য)। বিদ্যালয় ৪টিতে ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক পৃথক ৭টি হোস্টেল ও বি এস এড কলেজের জন্য ১টিসহ মোট ৮ (আট)টি হোস্টেল রয়েছে।

প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের মোট ১৫৪ জন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজে ১২৮ জন প্রশিক্ষণার্থী পড়াশোনা করছে। এ কেন্দ্রের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ কর্মকর্তা এবং কর্মচারীর মোট পদ ৭৫ টি।

 

মূল উদ্দেশ্যঃ 

 

এদেশের দরিদ্র ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর এক বিরাট অংশ হচ্ছে প্রতিবন্ধী। এদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল সৃষ্টি, বিশেষ শিক্ষা উপকরণ তৈরি ও বিতরণসহ সর্বস্তরের জনগণকে সচেতন ও উদ্ধুদ্ধকরণে সহায়তা প্রদান করে সমাজের মূল স্রোত ধারায় একীভূত করা এ কেন্দ্রের মূল উদ্দেশ্য।

 

কার্যক্রমের বিবরণঃ 

 

কেন্দ্রের অভ্যন্তরে মোট ১৩টি ভবনের মধ্যে ৩ তলা বিশিষ্ট প্রধান ভবনটিকে কেন্দ্রের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তাছাড়া এ ভবনে রয়েছে বিশেষ শিক্ষা শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ, বি এস এড হোস্টেল ও রিসোর্স সেকশন। বুদ্ধি, শ্রবণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র ছাত্রীদের জন্য ৪টি পৃথক স্কুলসহ ছেলে ও মেয়েদের জন্য রয়েছে ৭টি হোস্টেল।

 

বিশেষ  শিক্ষা  শিক্ষক  প্রশিক্ষণ  কলেজঃ

ক্র:  নং

কোর্সের নাম

মোট আসন

আবাসিক আসন সংখ্যা

অনবাসিক

আসন সংখ্যা

হোস্টেলে অবস্থানরত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা

মন্তব্য

ছাত্র

ছাত্রী

 

ব্যাচেলর অব স্পেশাল এডুকেশন

 

১১৫

 

৩০

৮৫

৩০

 

---

 

 

মাস্টার্স অব স্পেশাল এডুকেশন

১০৫

 

 

 

প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ শিক্ষায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দক্ষ শিক্ষক তৈরির লক্ষ্যেই এ কলেজের সূচনা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত এ কলেজ ১ বছর মেয়াদি বি এড সমমানের বি এস এড (ব্যচেলর অব স্পেশাল এডুকেশন) ও এম এস এড (মাস্টার্স অব স্পেশাল এডুকেশন) কোর্স পরিচালিত হচ্ছে। প্রতি শিক্ষাবর্ষের শুরুতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি করা হয়। উক্ত কোর্সে বুদ্ধি প্রতিবন্ধীতা, বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীতা ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধীতা বিভাগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

 

রিসোর্স সেকশনঃ

 

প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা কার্যক্রমকে সহজ, সাবলীল ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে রিসোর্স সেকশনের ৩টি শাখা যথাক্রমে, টিচিং এইড, হিয়ারিং এইড এবং লাইব্রেরি রয়েছে। লাইব্রেরির এ শাখায় প্রতিবন্ধিতা ও অন্যান্য সাধারণ বিষয়ের প্রায়ই ৫ হাজার বই ও সাময়িকী রয়েছে । এর মাধ্যমে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজের প্রভাষক, অতিথি বক্তা ও প্রশিক্ষণার্থীসহ কেন্দ্রের সকল শ্রেণির পাঠকের পাঠ সেবা প্রদান করে যাচ্ছে । টিচিং এইড শাখায় বুদ্ধি , শ্রবণ  ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র ছাত্রীদের জন্যে বিশেষ শিক্ষা উপকরণ তৈরি, ক্রয়  ও বিতরণসহ বিভিন্ন উপরকরণের প্রাথমিক মেরামতের ব্যবস্থা রয়েছে। উপরোক্ত কার্যক্রম ছাড়াও এ দুটি শাখার কর্মকর্তাগণ কলেজের ব্যবহারিক ক্লাসে সহযোগিতা প্রদান ও বি এস এড কোর্সের প্রশিক্ষণার্থীদের প্রয়োজনে শিক্ষা সহায়ক উপকরণ সরবরাহ করে থাকেন।

গ) প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সমূহের কার্যক্রমঃ

বুদ্ধি , শ্রবণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের  জন্যে ৪টি মডেল বিদ্যালয়ে আবাসিক সুবিধাসহ ৭ বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি এসএসসি পর্যন্ত চালু আছে। এ বিদ্যালয়গুলো বিশেষ শিক্ষা শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজের বি এস এড ও এম.এস.এড কোর্সের প্রশিক্ষণার্থীদের পাঠদান অনুশীলনের জন্যে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র /ছাত্রীর গবেষণার (থিসিস) কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

৬-১১ বছরের মৃদু ও মাঝারী পর্যায়ের যে কোন ধরনের প্রতিবন্ধী শিশুর স্কুলে ভর্তির জন্যে  প্রতি বৎসর ডিসেম্বর মাসে ফরম বিতরণ করা হয়। তবে, এ্যসেসমেন্ট কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত শিশুরা আসন শূন্য সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট স্কুলে সম্পূর্ণ বিনা খরচে ভর্তি হতে পারে।

ক্রমিক নং

বিদ্যালয়ের নাম

অনুমোদিত আসনের সংখ্যা(জন)

বর্তমানে অনাবাসিক ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা

বর্তমানে আবাসিক ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা

বর্তমানে স্কুলে অধ্যয়নরত ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা (জন)

বালক

(জন)

বালিকা

(জন)

বালক

(জন)

বালিকা

(জন)

সরকারি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়

৫০

৪৪

১৭

১৭

১০

৮৮

সরকারি শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়

 

২০

---

২২

---

২৫

৪৭

সরকারি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়

২০

 

 

১৯

২৫

 

মোট

৯০

৪৪

৪৫

১৭

৫৪

১৬০

 

১) বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় :

বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে মোট আসন সংখ্যা ৫০ তবে বর্তমানে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮১। এর মধ্যে ২০ জন ছেলে ও ১০ জন মেয়ের জন্যে আবাসিক ব্যবস্থা  রয়েছে। বাকী ৫৩ জন অনাবাসিক, ছেলে ৩৫ জন মেয়ে ১৮ জন । এ বিদ্যালয়ে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য উপযোগী বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এদের কারিকুলাম প্রাথমিক শিক্ষার প্রচলিত কারিকুলাম হতে কিছুটা সহজ ও বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। শারীরিক সমস্যাগ্রস্ত বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্যে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি  ও অকুপেশনাল থেরাপির ব্যবস্থা রয়েছে।

২) শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় :

 শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের আবাসিক মোট আসন সংখ্যা ২০ জন এবং অনাবাসিক ২৮ জন।এ বিদ্যালয়ে শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের সাথে যোগাযোগের জন্যে বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যেমন ইশারা ভাষা, সার্বিক যোগাযোগ পদ্ধতি । তাছাড়া এদের কথা বলার প্রশিক্ষণ ও হিয়ারিং এইড ব্যবহারের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।  বিদ্যালয়ের পাঠদানে ক্ষেত্রে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার প্রচলিত কারিকুলাম অনুসরণে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

৩) দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ঃ

দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের আবাসিক মোট আসন সংখ্যা ২০ জন এবং অনাবাসিক ৫ জন। এখানে ১ম - ৫ম শ্রেণি পযর্ন্ত প্রাথমিক শিক্ষার প্রচলিত কারিকুলাম অনুসরণ করে ব্রেইল পদ্ধতিতে শিক্ষা দানের ব্যবস্থা রয়েছে। তাছাড়া ইন্দ্রিয় প্রশিক্ষণ, গণিত শেখার জন্যে এবাকাস,টেইলর ফ্রেমের ব্যবহার ও নিরাপদ চলাচলের জন্যে ওরিয়েন্টেশন ও মবিলিটি,সাদাছড়ি ব্যবহার, সাইটেড গাইড প্রশিক্ষণ ইত্যাদি  প্রদান করা হয়ে থাকে। 

ঘ) শিক্ষা পদ্ধতিঃ

জাতীয় বিশেষ শিক্ষা কেন্দ্রের স্কুলগুলোতে সাধারণ স্কুলের মত ন্যাশনাল কারিকুলাম অনুসরণ করা হয়। তবে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা কারিকুলাম প্রাথমিক শিক্ষার প্রচলিত কারিকুলাম হতে কিছুটা সহজ ও বিশেষ বৈশিষ্ট্য পূর্ণ। এখানে ছাত্র ছাত্রীদের বিশেষ পদ্ধতিতে শিক্ষা দেয়া হয়। যেমন-

* বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের- বিহেভিয়ার মডিফিকেশন থিওরি, ওয়ার্ক এনালাইসিস, মডেলিং, চেইনিং, শেইপিং,  

   প্রম্পটিং,রিইনফোর্সমেন্ট, প্লে -থেরাপী, মিউজিক থেরাপী ইত্যাদি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

* প্রতিটি ছাত্রের জন্য ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষা পরিকল্পনা (আই.ই.পি) তৈরি করা হয়।

* শারীরিক সমস্যাগ্রস্থ শিশুদের জন্য নিয়মিত ফিজিওথেরাপি ও স্পীচ থেরাপির ব্যবস্থা রয়েছে।

* বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ইশারা ভাষা, সর্বিক যোগাযোগ পদ্ধতি, এদের কথা বলা প্রশিক্ষণ ও হিয়ারিং এইড

   ব্যবহারের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

* দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের ব্রেইল পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করা হয়। এছাড়া গণিত শিখানোর জন্য এবাকাস ও

   নিরাপদ চলাচলের জন্য ওরিয়েন্টেশন ও মবিলিটি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। 

 

ঙ) শিক্ষা সহায়ক অন্যান্য কার্যক্রমঃ

 

* প্রতিবন্ধী শিশুদের জীবনমান উন্নয়ন ও বুদ্ধিমত্তা বিকাশের জন্য জাতীয় বিশেষ শিক্ষা কেন্দ্র বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা সহায়ক  কার্যক্রমের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।

* কেন্দ্রের ৩টি বিদ্যালয়ের সকল প্রতিবন্ধী শিশুর জন্যে এ,ডি,এল (দৈনন্দিন কার্যাবলী) প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।

* প্রতিবন্ধী শিশুদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য স্কুলে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ- আর্ট, পেইন্টিং, সেলাই, ব্লক প্রিন্ট, হ্যান্ড গ্লাস পেইন্ট, কাটিং, পেস্টিং, স্বাস্থ্য ও যত্ন ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা চালু আছে।

* মানসিক ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদেরকে একজন অভিজ্ঞ সংগীত শিক্ষিকার তত্ত্বাবধানে নিয়মিত সংগীত শিক্ষা দেয়া হয়। তাছাড়া শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের অভিনয় ও নৃত্য এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের আবৃত্তি ও গল্প বলা ইত্যাদি বিষয়ে পারদর্শী করে তোলার ব্যবস্থা রয়েছে।

* প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়মিত শরীরচর্চা ও খেলাধূলার ব্যবস্থা আছে ।  এর জন্য একটি বড় খেলার মাঠ রয়েছে এবং একজন অভিজ্ঞ শরীরচর্চা শিক্ষক  আছেন। তাছাড়া স্কাউটিং বিষয়ে কেন্দ্রস্থ ৪টি বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষিকার স্কাউট প্রশিক্ষণ রয়েছে , যাদের তত্ত্বাবধানে প্রতিবন্ধী শিশুদের বয়েজ স্কাউট ও গার্লস গাইড প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।          

ঙ) হোস্টেল কার্যক্রম :

কেন্দ্রে  বুদ্ধি, শ্রবণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্যে পৃথক পৃথক আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারি খরচে এদের খাবার, প্রসাধনী, পোষাক ও ঔষধ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এদের তত্ত্বাবধানের  জন্যে হাউজ প্যারেন্ট, মেট্রন ও  এটেনডেন্ট রয়েছেন।

চ) চিকিৎসা সুবিধা :

কেন্দ্রের সকল প্রতিবন্ধী শিশুর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্যে একজন খন্ডকালীন ডাক্তার ও একজন সার্বক্ষণিক নার্স (সিনিয়র স্টাফ নার্স) নিয়োজিত রয়েছেন। 

ছ) যানবাহন সুবিধাঃ

কেন্দ্রের ৪টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের অনাবাসিক ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলে আনা নেয়ার জন্যে ৩২ আসন বিশিষ্ট ১টি স্কুল বাস রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে যা অকেজো হয়ে পড়ে আছে। বিভিন্ন  প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগের জন্যে ১টি সচল প্রাইভেট কার রয়েছে। 

প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে এ পর্যন্ত সকল কার্যক্রমের সফলতা :

প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দানের একমাত্র সরকারি কলেজ হিসেবে অত্র কলেজ সারা দেশের প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একবছর মেয়াদি বি এস এড কোর্সসহ স্বল্প মেয়াদি প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে আসছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৯৫ সাল থেকে শুরু করে ২০১৮ পর্যন্ত ব্যাচেলর অব স্পেশাল এডুকেশন (বিএসএড) কোর্সের সমাপ্তকৃত ব্যাচের সংখ্যা ২২ টি এবং এ পর্যন্ত ৫২৬ জন প্রশিক্ষণর্থী বি এস এড ডিগ্রী নিয়ে বিভিন্ন সরকারি,বেসরকারি কার্যালয়ে কর্মরত আছেন।  এছাড়া তিনটি বিদ্যালয় থেকে ১৯৯২ সাল হতে ২০১৮ পর্যন্ত প্রায় ৭০০ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করে সফলতা অর্জন করে আসছে। তাছাড়া অত্র কেন্দ্রের অভ্যন্তরে অবস্থিত বাক - শ্রবণ, দৃষ্টি ও মানসিক প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর প্রায় ২০ জন করে প্রতিবন্ধী শিশু প্রাথমিক সমাপনী , জেএসসি, এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে এবং শতভাগ উর্ত্তীন হচ্ছে। এ সব প্রতিবন্ধীরা অভ্যন্তরে প্রাক-প্রাথমিক ভকেশনাল প্রশিক্ষণ গ্রহন করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করছে। তারা নিজেদের জীবনে, পরিবারে ও সমাজের উন্নয়নে সাধারনের ন্যায় সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে।  

জাতীয় বিশেষ শিক্ষা কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ তালিকা:

ক্রমিক

প্রশিক্ষণের নাম

প্রশিক্ষণার্থী

ব্যাচেলর অব স্পেশাল এডুকেশন

বিশেষ শিক্ষা শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ ও স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ, প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক এবং অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ, বিশেষ শিক্ষায় শিক্ষক হতে আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রী।

অভিভাবক কাউনন্সেলিং

পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি

কম্পিউটার প্রশিক্ষণ

শিশু আইন, নিউরো ডেভলপমেন্টোল প্রতিবন্ধী সুরুক্ষা ট্রাষ্ট আইন-২০১৩ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন- ২০১৩

বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ (ব্লক প্রিন্ট, হ্যান্ড গ্লাস পেইন্ট , কাটিং পেস্টিং, স্বাস্থ্য ও যত্ন, আর্ট, পেইন্টিং ও সেলাই

প্রাথমিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরিচর্যা সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ।

শিক্ষা উপকরণ প্রস্তুতকরণ প্রশিক্ষণ

শিক্ষক অভিভাবকদের মতবিনিময় সভা

১০

যৌন হয়রানি ও শিশু নির্যাতন সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ।

১১

ব্রেইল প্রশিক্ষণ

১২

ইশারা ভাষা প্রশিক্ষণ

১৩

প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:

১। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণে বিশেষ শিক্ষা কার্যাক্রমে গবেষনা ভিত্তিক উচ্চতর কোর্স এম.এস.এড চালু করার জন্য ইতোমধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন ও অধিভুক্তির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।

২। বাংলাদেশে সরকারি পর্যায়ে এই প্রথম বাক-শ্রবণ বুদ্ধি ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধীসহ সকল ধরণের প্রতিবন্ধীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে একটি বিশেষায়িত কলেজ চালু করার জন্য ইতোমধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে ।

৩। প্রতিবন্ধী শিশুদের মৌলিক চাহিদা পূরনে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মেয়েদের জন্য আবাসিক মাধমিক বিদ্যালয় অনুমোদনের জন্য সমাজসেবা অধিদফতরে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে।

৪। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার জন্য আধুনিক ও জীবনমুখী ভকেশনাল ট্রেনিং কোর্স চালু করণের প্রক্রিয়া চলছে।

৫। বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এবং তাদের অভিভাবকদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতি ইশারা ভাষার সার্টিফিকিট কোর্স চালু করণের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।

৬। বিএসএড কোর্সে বাক ও শ্রবণ,দৃষ্টি, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিভাগের সাথে নতুন করে অটিজম বিভাগ চালু করনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।